Photo Source - Golpo Boli |
আমার এখনো
আছে মনে !😌
তুমি কেমন
দেখতে ছিলে তা হয়তো ভুলে গিয়েছি তবে এতটুকু এখনো মনে আছে যে প্রথম যেদিন তোমায় দেখেছিলাম
আজ হতে প্রায় সাড়ে সাত বছর আগে যেদিন, হুম সেই শীতের রাতের কথা বলছি যেদিন তুমি প্রথম
আমার এই চোখে ধরা দিয়েছিলে। আমার আজো আছে মনে
তুমি সেদিন একটি কালো চাঁদরে নিজেকে জড়িয়ে
রেখে ঠিক আমার বিপরীত উঠানে বসে ছিলে। আমার এখনো আছে মনে চাঁদরের ভাঁজ এর নিচে হতে
দেখা যাচ্ছিল একটি লাল রঙের কাপড় পরেছিলে । তবে আলোর অল্পতার কারনে আমি আজো এই বিষয়ে
সন্দিহান যে আসলে তুমি যেই কাপড়টি পরেছিলে তার রঙ টকটকে লাল ছিল কিনা !! আসলে তোমাকে
দেখেই সেদিন এই চোখগুলো মন ভরতে পারছিল না তাই শাড়ির রঙের দিকে তেমন একটা খেয়াল করার
কথা তখন মনেই আসেনি । আমি তখন প্রায় মন্ত্রমুগ্ধ
হয়ে একনাগারে তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম ।
কিভাবে যেনো
এতো লোকের ভিড়ে ,সবার হতে চোখ সরে গিয়ে সেই তোমার দিকেই এই চোখগুলো তাকিয়েছিল। জানিনা
সেদিন তুমিও আমায় দেখেছিলে কিনা । তবে তোমাকে জানাতে চাই যে সেদিনের সেই মুহূর্ত হতে
তার পর প্রায় কমপক্ষে দুটি বছর এমন কোনো দিন আমার ভাবনায় আসে না, যে দিনটা আমি তোমায়
না ভেবে কাটিয়েছি অর্থাৎ তোমায় চোখে ভাসায়নি এমন দিন মনে করা মুশকিল ।
তোমার সাথে
দেখা আমার দিন কয়েক এরই হবে, বড়জোর চার থেকে পাঁচ দিনের মতোই হবে । তবে আমি আজো সেই
স্মৃতি আঁকড়েই বসে আছি । সেই প্রথম দেখার পর , ঠিক সেই রাতটি আমি তোমার কথা ভাবতে ভাবতে
কাটিয়েছি । শুধু ভেবেছি রাত কখন শেষ হবে আর আমি তোমায় আরেকটিবার আবার দেখবো, দেখবো
আবারো মন ভরে আর সাথে পরিচয়ও হবো। সেই রাতে আমি ঘুমাতে পেরেছিলাম কিনা তাতো সঠিক মনে
করতে পারছি না তবে ঘুম হতে সকাল সকালই উঠেছিলাম ।
যদিও তখন আমার
বদ অভ্যাস ছিল ঘুম হতে দেরি করে উঠার তবু সেদিন কি করে যেনো ততোটা তাড়াতাড়ি উঠে গিয়েছিলাম,
সম্ভবত তোমায় আবার দেখার লোভ এই চোখ আর সংবরণ করে রাখতে পারছিল না । যাইহোক সকালে ঘুম
হতে উঠেই ঘর হতে বাহির হয়ে , খেয়াল করেছিলাম আমি সেই উঠানের দিকেই যেই উঠানে কিনা তুমি
গতকাল রাতে আমার বিপরীতে বসেছিলে। তবে আফসোস সেখানে উঠানটাতো গতকাল রাতের মতো একই ছিল
তবে সেখানে তুমি ছিলে না । সেদিন আমি ভেবেছিলাম জীবন সিনেমার মতো হয়না !! কেননা সিনেমা
হলে এখানে অবশ্যই পরিচালক কোনো না কোনো কৌশল অবলম্বন করে তোমাকে সেখানে বসিয়ে রাখতো
আর আমার সাথে পরিচয় ঘটাতো ।
যাইহোক রাত
আমার খুব ভালো তোমার ভাবনায় কাটলেও সকালটা ভালো একেবারেই সেদিন ছিলনা আমার এখনো মনে
আছে আর ভালো না হওয়ার কারনটা ছিলে তুমি । সেদিন যদি সকাল সকালই দেখা দিয়ে দিতে তাহলে
এই আফসোসটা মনে হয় না আমি এই বর্তমান সময়ে এই স্মৃতি লিখতে গিয়ে হতাম । আচ্ছা এই কথাটি
আমার এখন এই কথাগুলো এই এতোগুলো বছর পাড় হয়ে যাওয়ার পর মনে হলো, আচ্ছা তোমারও কি তাহলে
ঘুম হতে দেড়ি করে উঠার অভ্যাস ছিল নাকি ? নাকি আবার তুমি সেদিন আমার হতেও আরো সকালে
ঘুম হতে উঠে গিয়ে , ঠিক আমারই মতো করে আমার উঠানের দিকে তাকিয়ে আমায় না
দেখতে পেরে মন খারাপ করে ছিলে ? যাক এতো বছর যে একটা আফসোস ছিল আজ হতে তাহলে
এই সন্দেহ রকমের কথাটি ভেবে ভেবে আফসোস করব না, যে হয়তো তোমারই অভ্যাস ছিল দেড়ি করে
ঘুম হতে উঠার অথবা তুমি উঠেছিলে কিন্তু আমিই সেদিন পরে ঘুম হতে উঠেছিলাম ।
আচ্ছা তাহলে
আবার বর্তমান হতে স্মৃতিতে ফিরে যাই ………… কি বলো ?
যদি খুব সকালেই
উঠেছিলাম তবুও তোমার সাথে সেদিন দেখা হয়েছিল প্রায় সকাল ১০টা থে ১১ টার মধ্যে আমার
যতটুকু আর কি মনে হয়। তুমি হয়তো তখন কিছু সংখ্যক মেয়েদের হয়তো তোমার পূর্ব পরিচিত তাদের
সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলে আর আমি বাজার হতে নাস্তা করে আমার বাবার সাথে বাসাত ফিরছিলাম
। আমি হঠাৎ করেই তোমায় দূর হতে দেখে অনেক উৎসাহী হয়ে উঠেছিলাম , কেন তা অবশ্যই আমি
জানতাম না । তবে সেদিনের সেই অনুভূতিটাই ছিল অন্য ধরনের যা শব্দে বোঝানো প্রায় অসম্ভবের
তালিকার মধ্যেই পরে। আমি তোমার পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলাম , অদ্ভুত বিষয় আমি কেন জানি তখন
শুধু শুধু লজ্জা পাচ্ছিলাম ! অদ্ভুত এই কারনে বললাম কেননা তখন অবধি আমি তোমার সাথে
কথাও বলিনি এমনকি ঠিক মত জানিও না , চিনিও না তবু লজ্জায় লজ্জাবান হয়ে গিয়েছিলাম এর
মধ্যে তুমিও আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে ছিলে তাও হাসি ভাব নিয়ে । আমার এখনো
মনে আছে যেখানে আমি ভেবেছিলাম তোমার সাথে পরিচিত
হবো , সেখান আমি আরো উল্টো তাড়াতাড়ি করে তোমার পাশ কাটিয়ে চলে এসেছিলাম । সেদিন এক
আনন্দ ছিল এই অজানা কথাটি ভেবে যে তুমি বোধহয়ও পছন্দ করো যেহেতু তোমার তাকানোতে এক
ধরনের রহস্য ছিল । হ্যাঁ যেহেতু আজ অবধি আমি জানিনা সেই রহস্যটি কি । হতে পারে আমাকে তোমার
আজব লেগেছিল কেননা আমার মতে আমি তখন দেখতে অনেকটা বোকাসোঁকা ছিলাম আর দেখতেও ততটা সুন্দর
ছিলাম না । ছিলাম না বলে এইটা ভাবার কোনো কারন নেই যে এখন আমার সৌন্দর্য্য একেবারে
উতলে উতলে পরছে আসলে আমি বুঝাতে চাচ্ছি যে সময়ের সাথে সাথে মানুষ বদলায় আর আমিও তো
মানুষ তাই আমিও অবশ্যই আগে যেমন ছিলাম এখন আর নেই , কিছুটা হলেও বদলেছি ।
আমি জানিনা
তখন সেই রহস্যটার মানে আদৌও কি ছিল তবে সে যাইহোক না কেন , আমার তা খুব প্রিয় ছিল
! আমি তোমার পাশ কাটিয়ে আসার পরেই নিজেই নিজের সাথে বিরক্তভাব প্রকাশ করেছিলাম নিজের
ব্যবহারের জন্য । আমি কেন এমন তাড়াহুড়ো করে
তোমার পাশ কাটিয়ে আসলাম আর তোমার কাছে বিষয়টা আদৌও কেমন লেগেছে এই বিষইয় দুটো আমায়
আহত করতে লাগছিল । আমি আবার তখন নিজেকে এইভেবে বুঝ দিয়েছিলাম যে যখন তোমার সাথে আমার
ভাব হয়ে যাবে তোমায় আমি সব বুঝিয়ে বলে দিব , সাথে আমি আরো বলে দিব যে আমি মানুষটা খুবই
অমিশুক ধরনের তাই আমার এই সব উদ্ভট ব্যবহারে কখনো খারাপ কিছু মনে করো না ।
আমি এখন সে
কথাটা কল্পনা করি যে আমি যতবারই তোমার কাছ দিয়ে গিয়েছি প্রতিবারই মাথা নিচের দিকে করে
তাড়াতাড়ি করে তোমার পাশ কাটিয়ে চলে এসেছি আর আমি প্রতিবারই খেয়াল করেছি আড় চোখে যে
তুমি প্রতিবারই আমায় দেখে হেসেছো ও সেই চোখে রহস্য লুকিয়েছো , কিন্তু কি ছিল সেই রহস্য?
এমন নয় যে আমি তা জানার চেষ্টা করিনি !! আমার তখন প্রধান লক্ষ্যই ছিল তোমার সাথে ভাব
করা তবে আমার অমিশুক ভাব প্রতিবারই আমার আর তোমার পরিচিত হওয়ার মাঝে বিশাল দেয়াল হয়ে
দাঁড়িয়ে যেত । তাইতো একটি নতুন কৌশল খাটিয়ে দেখলাম অন্য কিভাবে ভাব করা যায় । তখন ঈশ্বরও
বোধহয় খুব সহায় ছিলেন আমার উপর তাই তো একটি উপায়ও করে দিয়েছিলেন ।
সেই উপায় ছিল
তোমার মামা অথবা সম্ভত মামাতো ভাই একজন ছিল তার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মধ্য
দিয়ে । আমি ভেবেছিলাম তার সাথে ভাব লাগিয়ে তোমার সাথে পরিচয় হবো তাই তো প্রায় দুদিন
কথা বার্তা বলে তার সাথে ভালো বন্ধুত্ব করেছিলাম , আমার বয়সী ছিল তো তাই বেশি সময় লাগেনি।
যদিও এটা একটা ভালো দিক ছিল তবে অন্যদিকে তোমার দিকে সামনাসামনি না তাকাতে পারাটা আর
পাশ কাটিয়ে চলে আসাটা যেনো আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল কেননা প্রতিবারই একই কাজ করতাম
আর তুমিও সেই আগের মত আমার দিকে তাকিয়ে মুগ্ধময় হাসি দিতে আর তাকিয়ে থাকতে । আমি আজো
মনে রেখেছি সেই হাসি আর তোমার চোখের সেই রহস্য।
ইতিমধ্যে তোমার
সাথেই হয়তো ছিল বা তোমারই কোন বোন হয়তো ছিল যে একদিন হঠাৎ করেই আমার সাথে এসে কথা বলতে
শুরু করে দিয়েছিল যদিও আমি জানতাম না সে তোমার কি হয় সম্পর্কে । আসলে আমি তখন একটি
গোলাপের ছবি এঁকে তার পাশে ইংরেজীতে কিছু একটা লিখছিলাম!! কি লিখছিলাম সেটা মনে নেই
তবে এটা ভাবার কোনো কারন নেই যে আমি তোমায় ভালোবাসি এমন কিছু লিখছিলাম । আসলে আমার
ইংরেজী লেখা তখন অনেকটাই ভালো ছিল , সব সময়ই লিখতাম তো তাই আর কি ! সেও আমার ইংরেজী
হাতের লেখার প্রশংসা করছিল । তারপর আরো কিছু কথা হয়েছিল তবে সেগুলো ছিল আমি কিসে পড়ি
, কোথায় থাকি এসব নিয়ে !!!
জানিনা কেন
জিজ্ঞাসা করছিল আর অবশ্য জানার আগ্রহও ছিল না তখন আর না আছে এখন । কেননা আমি তো তোমায়
মনে রেখেছিলাম বা রেখেছি ।
যাইহোক তোমার
সেই ভাইয়ের সাথে ভাব করা শেষ তাই ভেবেছিলাম সেদিন যে তার মাধ্যমে তোমার সাথে ভাব করব
। কিন্তু ভাগ্য সেখানেই এইটি সিনেমার মতো গল্প করে দিয়েছিল আসলে যেখানে তার এমন কিছু
করার কথাই ছিল না । আর সেটা কি ছিল ……… !
যেদিন মনে
এতো সাহস নিয়ে ভেবেছিলাম যে আজ কথা বলব দুপুরে তোমার সাথে সেদিনই আর সেই মুহূর্তেই
খেয়াল করলাম তোমাকে বিদায় দেয়ার সময় এসে পড়লো । আমার সেদিন অবধি জানা ছিল না যে তুমিও
আমার মত আসলে সেখানে বেড়াতে এসেছিল । যেদিন কথা বলার কথা ছিল সেদিনই না বলতে চাওয়ার
একটা কথা হয়ে অতীতের গল্প থেকে গেল । এমনকি
ভেবেছিলাম তোমার সাথে পরিচয় যখন হবো তোমার নামটি আগে জানবো । কিন্তু আফসোস সেটাও শেষমেশ
আর জানা হলো না কেননা তোমার চলে যাওয়ার সময়, তোমায় ডাক দিয়ে তোমার সাথে পরিচয় হব এমন
সাহস তখন আর দেখানোর মতো উপায় ছিল না আর তোমার সেই ভাই তারও আশেপাশে কোনো দেখা পাচ্ছিলাম
না । যদি পেতাম তাহলে অন্তত নামটা জেনে নিতাম । তবে আমি আজো নিশ্চিত যে তোমার নামটাও
অবশ্যই তোমারই মতো খুব সুন্দরই হবে।
সেদিন আর আজকের
এইদিন তফাৎ আসলে কিছুই নেই ! সেদিনই কিছু জানা ছিল না তোমার বিষয়ে এমনকি আজ অবধিও কিছু
জানা নেই , এখন তো তোমার সেই চাঁদ মুখখানাটাও মনে নেই । শুধু মনে আছে সেই রহস্য আর তোমার সেই চোখ আর সাথে
মনে আছে চলে যাওয়ার দিনে তুমি সাদা রঙের একটি
পোশাক পরেছিলে । চলে যাওয়ার সময়ও সেই রহস্য ছিল তোমার চোখে তবে হাসিটা কেন জানি মনে
হচ্ছে সেদিন দেখিনি যেমনটা আমি সামনে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় তুমি হাসতে, হয়তো এবার তুমি
যাচ্ছিলে তাই এমন আর আগে তো আমি চলে যেতাম।
জানিনা এই কথাগুলো বলার এখন আর সময় আছে কিনা কিংবা তোমার
সাথে কখনো দেখাও হবে কিনা তবে তুমি যদি এটা পড়তে পাও কোথাও তাহলে জেনে রেখো , জানিনা
সেই রহস্য আমার মাঝেও তুমি দেখতে পেয়েছিলে কিনা তবে এতোটুকু বলতে পারি ভালোবাসতাম কিনা
তা নিশ্চিত নই তবে খুব ভালো লেগেছিল , যা পরিমানে এতটাই ছিল যে আজো আর কাউকে তেমন ভালোই
লাগেনি আর হয়তো তুমি ছাড়া আর অন্য কাউকে লাগবে কিনা !!
তার কিছুদিন
পরেই আমিও সেখান হতে চলে এসেছিলাম নিজ বাসায় তবে মনে মনে ভবেছিলাম পরেরবার যখন আবার
বেড়াতে যাব অবশ্যই তোমার সাথে দেখা হবে আর তখন আবার ভাব করার চেষ্টা করব। কিন্তু ভাগ্য
আবারো তার খেলা দেখাচ্ছে , সেদিন আর আজকের দিন মাঝে সাড়ে সাতটি বছর , হয়তো তারও বেশি
কিন্তু তারপর আজো আমি সেখানে আর বেড়াতে যাইনি ।
কিন্তু এখনো
মনে আছে, মনে রেখছি প্রতিটি
বিষয় । সময়ের স্রোতে ভেসে যাওয়া হতে তোমার চেহারাটা আটকে রাখতে পারিনি তবে এছাড়া
বাকিসব আজো মনে আছে । চেহেরাটা হয়তো ভুলে যাওয়ার পেছনেও একটা কারন আছে , হয়তো কিছুটা
এমন যে একদিন তুমি সামনাসামনি এসে পরবে আর আমি তোমায় চিনে ফেলবো আর বলবো তোমায় তো আমি
মনে রেখেছি।
Comments
Post a Comment