Skip to main content

সম্পর্ক | Sandip Chandra Das

 ফোনে কথা বলার শেষের দিকে হঠাৎ বলে উঠা-  "চলো দেখা করি !" 

রাত ১২টা ৩৫ মিনিট আর ২৫ সেকেন্ড , সে বললো তুমি আসো আমি বারান্দায় দাড়ালাম ......... জলদি !

আমি বললাম না একটু দেড়ি করেই আসবো !! 

;কেন ?

আমি চাই তুমি একটু সাজো ... ;

; না সাজলে হবে না ?

হবে না কেন ! অবশ্যই হবে । 

;জোর করবে না যাতে করে আমি সাজতে বাধ্য হই ?

নাহ ! 

কেন ? 

এমনি ( কারন আমি জানি সে সাজবেই ) ! তুমি বারান্দায় থেকো আমি আসছি ।


'


' ১০ মিনিটের পথ - রাতে রিক্সাও নেই তাই হেটে হেটেই আসতে হচ্ছে !


'


হাতে চায়ের কাপ নিয়ে এই শীতের রাতেও সে বারান্দায় অনেক রাত অবধি অপেক্ষারত আছে সে , খুব সাজুগুজু করে তেমন কিছু নয় । একেবারে সাদামাটা বেশে !

চুল গুলো খুব সুন্দর করে বাধা , হাতে অল্পকিছু করে নীল চূড়ি পরা যাকিনা রাতের কারনে গাঢ় নীল রঙের দেখাচ্ছে আর কপালের মাঝামাঝিতে ছোট একটি কালো টিপ আর বোধহয় নীল রঙের কাপড় পরে আছে এবং নিজেকে সুন্দর করে জড়িয়ে রেখেছে আমার দেওয়া সেই মিষ্টি রঙ্গের কাশ্মিরী চাঁদর দিয়ে ( তার জন্যই চাঁদরটি আনা কেননা তার খুব শখ ছিল )। 


আমি এসে হাজির ! 

সাধারনত এতো রাতের দিকে পথে কাউকে হাটতে দেখলে - পাহারা দেওয়া কুকুরগুলো একটু উত্তেজিত হয়ে উঠে ।

 তবে তার বাসার নিচে বসে থাকা কুকুরগুলো আমায় খুব ভালো জানে তাই তারা আ্মাকে দেখেও আরাম করে শুয়ে আছে । 

; সে কল দিলো !

এতো সামনাসামনি এসেও ফোন করে তার সাথে কথা বলতে হচ্ছে  কেননা জোরে জোরে এতো রাতে কথা বললে  প্রতিবেশিরা আর তার পরিবারের সবাই হয়তো জেগে যাবে । 

ফোনে বললো গেট খোলা আছে ...... ছাদে চলে এসো ! 

কানে মোবাইল রেখেই হাতে ইশারা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কেন ?

; আসতে বলেছি এসো !

একটু ভয় ভয় নিয়েই উঠে গেলাম ! ( এমনটা নয় যে এই প্রথম তার সাথে তাদের ছাদে এলাম । )

গিয়ে দেখি আরেক কাপ চা রাখা আছে ! সে সেই কাপের দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললো চা'টা গরম আছে , এক্ষুনি বানিয়েছি। 

খেতে থাকো আজ আমরা সারারাত কথা বলে কাটাবো । 

সারারাত !!!

; হুম তোমার কোনো সমস্যা আছে ?

ইয়ে মানে !!

; আচ্ছা তুমি তো কিছু বললে না যে আমি ।

কি নিয়ে ?

; এই যে আমি সাজুগুজু করে তোমার জন্য হাজির হয়েছি , খেয়ালই করো নি ? খুব খারাপ দেখাচ্ছে নাকি ?

মোটেও না ! ভারী মিষ্টি আর সুন্দর লাগছে । :)

; তাহলে আগে বললে না কেন ? 

এভাবেই । 

; ওহ আচ্ছা ! ঠিক আছে চা খাও । তোমার তো আবার রাত জেগে চা খেতে খেতে আকাশ দেখতে বা জেগে থাকতে ভালো লাগে ।

আজ আমারো মনে চাচ্ছিলো রাত জাগতে তাই ভাবলাম  আজ রাতটি না হয় তোমার সাথে কথা বলতে বলতে , তোমার ভালো লাগার মতো করে কাটাই !

জানি তুমি যদিও খুব কম কথা বলো তবে অসুবিধা নেই ; এই দুবছরে তোমার সাথে সংসার করতে করতে তোমার না বলা কথাগুলোও বুঝে যাওয়ার ঐশ্বরিক ক্ষমতা আমার আয়ত্ত হয়ে গিয়েছে । 

:)

তোমাকে কিন্তু এই সাদা পাঞ্জাবীটাতে এই রাতের আলোয় অনেক ভালো দেখাচ্ছে  ।

 ধন্যবাদ ! তো মা-বা বা কেমন আছেন ?

;উনাদের ডেকে দেব ?

কি যে বলো ! এই এতো রাতে তাও আবার ছাদে । 

; চাইলে ডাক দিতেই পারি , আমি আগেই আজ উনাদের জানিয়ে দিয়েছি আজ তোমার সাথে ছাদে কথা বলতে বলতে রাত কাটাবো । যদিও উনারা বলেছেন তোমাকে সকালে চা-নাস্তা খেয়ে যেতে !

আনি হাসি দিতে দিতে বললাম আচ্ছা !

;  সে চোখ একটু বড় করে  বলে উঠলো ,কি আচ্ছা ? সূর্য উঠার সাথে সাথে আবার বাসায় চলে যাবে ! আজ তুমি শুধু আমার জন্য এসেছো তাই আমার সাথেই শুধু দেখা করবে প্রয়োজনে আবার সকালে এসে বাবা - মায়ের সাথে কথা বলে যাবে । 

আমি - একেবারে দেখা করে গেলেই তো হয় !

; মোটেও না !  এইবার তুমি শুধু আমরা জন্য এসেছো অর্থাৎ আমার অধিকারে আছ তুমি এখন ! আর তাই সকালে দেখা করলে আমার অধিকারটার হানি ঘটবে ... তাই না ! 

আচ্ছা ... আচ্ছা ! 

সে একমাত্র নিজের অধিকারিত্ব আমার উপর ফলাতে পেরে খুবুই খুশি আর তার জন্য মুচকি হেসেই যাচ্ছে ! আর আমি এক সাথে দি চাঁদ দেখার আনন্দ উপভোগ করছি চা খেতে খেতে ।



Comments

Popular posts from this blog

হাবিজাবি । এক অসম্পূর্ন , অপ্রকাশিত বই। সন্দীপ চন্দ্র দাস

            হাবিজাবি                       আমার কথা     খুব ভালো নয় বরং একটু আকটু পড়তে ভালোবাসে এমন যে কেউ আমার লেখাগুলো কোনো একটি লেখা একবার পড়লেই আসলে বুঝে যাবে আমি লেখক বলার জন্য মূলত যোগ্য নই। আর আমি তা নিজেও মানি। শুধু যে মানি তাই নয়, সাথে মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করি। তবুও একজন সাধারণ মানুষের মনেও তো অনেক অনেক জমানো কথা থাকে যা বলা কঠিন , আমি সেই সাধারণ মানুষই যেকিনা সেই জমানো কথাগুলো লিখে ফেলি। হয়তো এই আশায় যে কোনো একদিন বসব অবসর হয়ে নিজের সাথে নিজে সেদিন এক এক করে সব পড়ব আর নিজেই ভেবে আশ্চর্য হবো যে কেন লিখেছিলাম এই লেখাটি । তাই আমায় একজন লেখক ভাববেন নাহ্‌ তাহলে সম্ভবনা এটারই বেশী যে আপনার মনে হবে এই হাবিজাবিগুলো পড়ে আপনার অনেকটা সময় অপচয় হলো। তাই আমি অনুরোধ করব ভাবুন একজন সাধারণ ব্যক্তি নিজের কথাগুলো লিখে চলে গিয়েছে, এখন আমায় জানার জন্য মূলত পড়ছেন।   অসম্ভব ভালো থাকবেন। আপনার জন্য পৃথিবীর সব ভালোবাসা রইলো।                                                   উৎসর্গ   সেই সুদর্শণাকে আমি আমা

তার মনের গলি ।

আমি জানি এই শহরের সকল অলিগলি , শুধু জানা আর হলো না- তার মনে অবধি গিয়েছে সেই এক রাস্তাটা ! আমি অসংখ্যবার বাহির হয়েছে সেই রাস্তার খোঁজে তবে প্রতিবার ব্যর্থ হয়েই নিজ ঘরের রাস্তায় চলে এসেছি। এমনটা নয় যে জিজ্ঞাসা করিনি কাউকে সেই রাস্তার ঠিকানা !! কিন্তু কেউই জানতো না তাই জানাতে পারেনি আর যারা জানতো তারা নিজের অংশীদার চাচ্ছিল না তাই ইচ্ছে করে জানাই নি।