Skip to main content

অনুভূতিগুলো জানার জন্য আধুনিক যন্ত্র প্রয়োজন

 


আমাদের এই আধুনিক যুগের মতোই আমাদের এখন একটি আধুনিক ধরনের যন্ত্র খুব জরুরীভাবে প্রয়োজন । ঠিক এমন একটি আধুনিক ধরনের যন্ত্র যা ব্যবহার করে একজন আরেকজনের মনের অবস্থা অনুধাবন করতে পারবে , সাথে এটাও জানতে পারবে যে কাছে থাকা ব্যক্তিটি কি ভাবছে ।

আমাদের খুব দূরের মানুষের ভাব বুঝতে পারবে এমন যন্ত্র না হলেও অন্তত কয়েক মিটার দূরত্বে থাকা কাছের মানুষটির মনের হতাশা, কষ্ট, একাকীত্ব বুঝতে পারব কিংবা পরিমাপ করে জানাতে পারবে এমন একটি আধুনিক যন্ত্রের প্রয়োজন ।

জানিনা কেন আমাদের এই পৃথিবী এমন হয়ে যাচ্ছে  সময়ের সাথে সাথে । আসলে পৃথিবী বললে ভুল বলা হবে, বলতে হয় আমরা কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছি । বদলে যাচ্ছে সময় , হয়েছে আদিম হতে নতুন আর নতুন হতে এখন হয়েছে আধুনিক তবে আমরা সময়ের সাথে সাথে বিবর্তন হলেও উন্নত ও বিকশিত চিন্তাধারার অধিকারী না হয়ে , হয়ে যাচ্ছি এক ভিন্ন ধরনের সত্ত্বা যাদের কাছে কিনা এখন মৃত্যু একটা এমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যাকিনা চাইলেই ঘটিয়ে দেয়া যায় ।

সমস্যা, হতাশা, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদি এই শব্দগুলো যদি এই সময়ে আমরা গুগলেও সার্চ করি তাহলে সেও বলতে পারবে না আদৌও কতটা পুরনো অর্থাৎ এইগুলো নতুন নয় । বহুদিন আগেও ছিল , আজো আছে আর আগামীতেও থাকবে। আরো যদি স্পষ্টভাবে বলি তাহলে বলাই যায় সৃষ্টির সাথে সাথেই এইগুলো সৃষ্টি হয়েছে আর সৃষ্টির শেষের দিনই এইগুলো শেষ হবে কিন্তু তবুও এই যুগ যেনো এইগুলো আরো নতুনভাবে অনুধাবন করতে শুরু করেছে ।  হ্যাঁ হয়তো সবার এই আবেগগুলো একই ধরনের হয়না, কারো কম বা কারো বেশি অথবা খুব বেশি । আর এই কম বেশিটা জানার জন্যই আমাদের একটি যন্ত্রের খুব প্রয়োজন।

আপনিই ভাবুন ! আপনি যার সাথে কিছুক্ষণ আগে কথা বলেছেন বা কিছু সময় আগে কথাবার্তা বলেছিলেন , সেই প্রাণবন্ত দেখতে দেখা মানুষটি যাকে কিনা দেখে আপনার কিছু সময়ের জন্য মনে হয়েছে তার মধ্যে পৃথিবীর কোনো প্রকার দুঃখ কষ্টের ছিটেফোঁটাও নেই , আরো নিজের জন্য আফসোস হচ্ছিল যে যদি তার মতো আমিও এভাবে জীবন পাড় করতে পারতাম , সব সময় হাসতে পারতাম, আমারো পাশে এমন অনেক মানুষেরা থাকতো যারা আমার সাথে মিশবে যেমনটা এখন তার সাথে মিশে ।

এখন এর কিছুক্ষণ পর বা কিছুদিন পরই আপনাকে কেউ বলে অথবা আপনি নিজেই জানতে পারেন যে সেই ব্যক্তি যাকে দেখে এতো আনন্দিত , প্রাণবন্ত  মনে হচ্ছিল সে একই ব্যক্তি মনের কষ্টে, হতাশার কারনে, একাকীত্বের জীবন আর কাটাতে না পেরে নিজেকে ধ্বংস করার পথে হারিয়ে গিয়েছে অর্থাৎ আত্মহত্যা করেছে । তখন আসলে বিষয়টা কতটা দুঃস্বপ্নের মতো হতে পারে ?  এর মানে আসলে আমাদের মুখের ভঙ্গিমা কিংবা আমাদের বাহ্যিক ব্যবহারগুলো, আমাদের ভেতরে অপ্রাকশিত আমাদেরই তাড়িত করা সেই ছুটন্ত অনুভূতিগুলোকে মিথ্যা প্রকাশ করতে পারে । এখন এই ছেঁড়ে চলে যাওয়া কথাটি কি আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সহজ ?

আমার পক্ষে তো সেই বিষয়টি মেনে নেওয়াই  অসম্ভব, আশা করি আপনার ক্ষেত্রেও সেটাই।

তাই বলেছিলাম একটি আধুনিক যন্ত্রের কথা যাতে আর কেউ আমাদের মিথ্যা ভাব ধরে আমাদের সাথে মিলেমিশে আপন হয়ে , ছেঁড়ে চলে যেতে না পারে। কষ্ট যে আমাদেরই হয় তা নয় , আপনি একবার ভাবুন যে চলে যায় তার কতটা ভয় থাকে মনে কিংবা অসহ্যনীয় কষ্ট থাকে, যা সে না পারে বলতে আর না পারে বুঝাতে । তাই আমাদের এমন একটি আধুনিক যন্ত্র খুব জরুরীভাবে প্রয়োজন ! যাকিনা আমরা আমাদের কাছেই সব সময় রাখবো , ঠিক এখন যেভাবে আমাদের স্মার্টফোনগুলো আমাদের কাছে রাখি । অবশ্যই সেই যন্ত্রটিও আমাদের কাছে থাকা স্মার্টফোনের মতোই কাজ করবে। আমাদের স্মার্টফোনে যখন কোনো অনাকাঙ্খিত ফাইল ডাউনলোড করলে , ভাইরাস স্ক্যানার আমাদের বিপদের সংকেত দেয় আর বলে যে আপনার প্রিয় মোবাইলটি বিপদের মুখে আছে এখনই জরুরী কাজগুলো করুন । ঠিক এমনই করে সেই আধুনিক যন্ত্রটি কাজ করবে । যখন আমরা কোনো মানুষের সামনে যাব – সেই যন্ত্রটি কাছের মানুষগুলোর মনের হতাশা ভাব, দুখঃ কষ্ট ও একাকীত্বের পরিমানটা পরিমাপ করে ফেলবে। আর যখন মনের চিন্তা ধারনাগুলো নেহাইতি খারাপ কিছুর দিকে ইঙ্গিত দিবে তখন আমাদের সংকেত দিবে সেই যন্ত্রটি , সাথে আরো বলবে , – “আপনি আপনার কাছে থাকা সেই ডানপাশে কালো টি-শার্ট পরা ছেলেটির কাছে যান, উনাকে জড়িয়ে ধরুন, উনাকে বলুন প্রতিটি সমস্যার সুন্দর সমাধান আছে । আপনি একা নন, আমরা আপনার পাশে আছি ।“ আরো বলতে বলবে যে , “  আপনি নিজের জীবনের সাথে অন্যায় করছেন , আপনি যে পথে হারাতে চাচ্ছেন সে পথ হতে অনেকে এর আগে সরে এসে জীবনে সেই উচ্চতা লাভ করেছে যা তাকে ইতিহাসে স্থান করে দিয়েছে । সমস্যা সমস্যাই না যদি আপনি বেঁচে থাকেন । আর আপনার মাঝে একটি ভুল ধারনা ঘুরপাক খাচ্ছে – আমি সঠিকটা বলে দিচ্ছি আর সেটা হলো যে আপনাকে অনেকে ভালোবাসে, আপনাকে অনেকে বিশ্বাস করে আর এই আমি তাদের মধ্যে একজন। চলুন একসাথে দেখিয়ে দেই  সেই কুলাঙ্গার চিন্তাকে যে ভালোবাসার জোর হতাশার চাইতে বেশি ।“

 

কি অনেক ভালো হতো না তাহলে ? তো এখন বলুন আমাদের কি এমন আধুনিক যন্ত্রের খুব জরুরীভাবে প্রয়োজন নয় কি ?

Comments

  1. ঠিক বলেছেন ভাই, দরকার।

    ReplyDelete
  2. একজন বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও বলতে হয় যে বিজ্ঞানের আজও আরো অনেক কিছুই জানার রয়েছে। হয়তবা আপনার ওই কাল্পনিক যন্ত্রটি ভবিষ্যতে আবিষ্কার করতে পারবে। আবার হয়তবা কখনো পারবে না। তাও আমাদেরকে আমাদের আশেপাশের মানুষের দুঃখ বেদনা আনন্দ সবকিছুই ভাগ করে নেওয়া উচিত।
    আপনার কথাগুলো ঠিক বলেছেন ভাই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. জ্বী কারো হাসি ভাব দেখে আন্দাজ করা অসম্ভব যে, আদৌও কি সেজন ভালো আছেন! তাই আমরা আমাদের আশেপাশের সবার দিকে খেয়াল রাখবো, অন্তত সেদিন অবধি যতদিন অবধি কিনা আমাদের এই আধুনিক যন্ত্রটি আবিষ্কার না হয়।
      ধন্যবাদ!! ভালো থাকুন ও ভালো রাখুন।

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

হাবিজাবি । এক অসম্পূর্ন , অপ্রকাশিত বই। সন্দীপ চন্দ্র দাস

            হাবিজাবি                       আমার কথা     খুব ভালো নয় বরং একটু আকটু পড়তে ভালোবাসে এমন যে কেউ আমার লেখাগুলো কোনো একটি লেখা একবার পড়লেই আসলে বুঝে যাবে আমি লেখক বলার জন্য মূলত যোগ্য নই। আর আমি তা নিজেও মানি। শুধু যে মানি তাই নয়, সাথে মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করি। তবুও একজন সাধারণ মানুষের মনেও তো অনেক অনেক জমানো কথা থাকে যা বলা কঠিন , আমি সেই সাধারণ মানুষই যেকিনা সেই জমানো কথাগুলো লিখে ফেলি। হয়তো এই আশায় যে কোনো একদিন বসব অবসর হয়ে নিজের সাথে নিজে সেদিন এক এক করে সব পড়ব আর নিজেই ভেবে আশ্চর্য হবো যে কেন লিখেছিলাম এই লেখাটি । তাই আমায় একজন লেখক ভাববেন নাহ্‌ তাহলে সম্ভবনা এটারই বেশী যে আপনার মনে হবে এই হাবিজাবিগুলো পড়ে আপনার অনেকটা সময় অপচয় হলো। তাই আমি অনুরোধ করব ভাবুন একজন সাধারণ ব্যক্তি নিজের কথাগুলো লিখে চলে গিয়েছে, এখন আমায় জানার জন্য মূলত পড়ছেন।   অসম্ভব ভালো থাকবেন। আপনার জন্য পৃথিবীর সব ভালোবাসা রইলো।                                                   উৎসর্গ   সেই সুদর্শণাকে আমি আমা

তার মনের গলি ।

আমি জানি এই শহরের সকল অলিগলি , শুধু জানা আর হলো না- তার মনে অবধি গিয়েছে সেই এক রাস্তাটা ! আমি অসংখ্যবার বাহির হয়েছে সেই রাস্তার খোঁজে তবে প্রতিবার ব্যর্থ হয়েই নিজ ঘরের রাস্তায় চলে এসেছি। এমনটা নয় যে জিজ্ঞাসা করিনি কাউকে সেই রাস্তার ঠিকানা !! কিন্তু কেউই জানতো না তাই জানাতে পারেনি আর যারা জানতো তারা নিজের অংশীদার চাচ্ছিল না তাই ইচ্ছে করে জানাই নি।   

সম্পর্ক | Sandip Chandra Das

 ফোনে কথা বলার শেষের দিকে হঠাৎ বলে উঠা-  "চলো দেখা করি !"  রাত ১২টা ৩৫ মিনিট আর ২৫ সেকেন্ড , সে বললো তুমি আসো আমি বারান্দায় দাড়ালাম ......... জলদি ! আমি বললাম না একটু দেড়ি করেই আসবো !!  ;কেন ? আমি চাই তুমি একটু সাজো ... ; ; না সাজলে হবে না ? হবে না কেন ! অবশ্যই হবে ।  ;জোর করবে না যাতে করে আমি সাজতে বাধ্য হই ? নাহ !  কেন ?  এমনি ( কারন আমি জানি সে সাজবেই ) ! তুমি বারান্দায় থেকো আমি আসছি । ' ' ১০ মিনিটের পথ - রাতে রিক্সাও নেই তাই হেটে হেটেই আসতে হচ্ছে ! ' হাতে চায়ের কাপ নিয়ে এই শীতের রাতেও সে বারান্দায় অনেক রাত অবধি অপেক্ষারত আছে সে , খুব সাজুগুজু করে তেমন কিছু নয় । একেবারে সাদামাটা বেশে ! চুল গুলো খুব সুন্দর করে বাধা , হাতে অল্পকিছু করে নীল চূড়ি পরা যাকিনা রাতের কারনে গাঢ় নীল রঙের দেখাচ্ছে আর কপালের মাঝামাঝিতে ছোট একটি কালো টিপ আর বোধহয় নীল রঙের কাপড় পরে আছে এবং নিজেকে সুন্দর করে জড়িয়ে রেখেছে আমার দেওয়া সেই মিষ্টি রঙ্গের কাশ্মিরী চাঁদর দিয়ে ( তার জন্যই চাঁদরটি আনা কেননা তার খুব শখ ছিল )।  আমি এসে হাজির !  সাধারনত এতো রাতের দিকে পথে কাউকে হাটতে দেখলে - পাহারা দেওয়া