Skip to main content

খুঁজতে থাকা আমিটাকে আমি । ব্যস্ততা ।


 

এখানে প্রতিটি মানুষই আমরা নিজেদের আলাদা একধরনের ব্যস্ততায় থাকি। ব্যস্ততা হলো নিজেকে ব্যস্ত দেখানোর ব্যস্ততা। যা ঘুম থেকে উঠার পর থেকে আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগ অবধি চলতে থাকে। এখন এই ব্যস্ততায় কখন, কিভাবে আর কি করে যে নিজেকে আমরা হারিয়ে ফেলি তার হদিস আমাদের নিজেদের কাছেও নেই। বেঁচে থাকার তাগিতে এতটাই দিশেহারা হয়ে গিয়েছি যে ঠিক কখন হুট করে বড় হয়ে গেলাম তারও কোনো ঠিক নেই!

 

বড় মানে কোনো সাধারণ ধরনের বড় নয় ! একেবারে বড়! যাকে বলা যায় বয়স্ক !

 

পরশু ভালো থাকবো বলে, আগামীকাল কি কি করব বা করতে হবে তার প্রস্তুতি আজ নিতে গিয়ে ঠিক নিজের দিকে খেয়ালই করা হয়নি। আজ যখন বহুদিন পরে আচমকাই প্রতিদিনের মতো ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম তখন নিজের স্বপ্নে সেই ছোট্ট নিজেকেই দেখলাম। বাহ্‌ কি চমৎকার ভাবে হাসছিলাম।  কিভাবে রাতের আকাশের তারা বোকার মতই না গুনছিলাম। বৃষ্টির ফোঁটা দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছিলাম। কত বড় বড় স্বপ্ন দেখছিলাম। হেরে গিয়েও কি অসম্ভব সুন্দরভাবে হাসছিলাম। যাকে দেখছিলাম তার সাথেই গুলেমিলে যাচ্ছিলাম - তখন কে আপন, কে পর এগুলো ভাববার সময়ই আমার হাতে নেই। একেবারে নির্বাক ছুটে চলা একটি আমি। যার কাছে পুরাতন বলে কিছুই নেই। প্রতিদিন একটি নতুন দিন। সবার সাথে কাটানোর আরেকটি সুন্দর দিন। যেখানে কিনা বৃষ্টি মানেই ভিজতে হবে, বিকেল মানেই না  ঘুমিয়ে খেলতে হবে, বাহিরে কেউ গেলেই তার সাথে সাথে যাওয়ার বাহানা ধরতে হবে, অনুষ্ঠানগুলোতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ করতে হবে। বাহ্‌ বহুদিন পর চোখের ওপারে স্বপ্ন আসলো।

খুব সুন্দর একটি স্বপ্ন নাহ্‌? কিন্তু এটাও বেশিক্ষণ ব্যস্ততার সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে পারলো না!

 

 হঠাৎ করেই রাত শেষ হয়ে গেল, চোখের ঘুম হারিয়ে গেল, অসাধারণ সেই আমিটা আবার মিশিয়ে গেল স্বপ্নের সাথে সাথে! ডান পকেটে থাকা মোবাইলের এলার্ম আর একই দিকে টেবিলে থাকা এলার্ম ঘড়িটি বিকট শব্দ জানিয়ে দিল এখন আমি বড় হয়ে গিয়েছি! উঠতে হবে আবার ব্যস্ত হতে হবে। আবার জীবন থেকে খুব বেশি বেশি প্রত্যাশা করতে হবে। ব্যস্ত হয়ে বাচতে হবে। দেখাতে হবে ব্যস্ত হয়ে থাকলে সফল হওয়া যায়।

 

তাই এখন সময় আবার ছুটে চলার । নিজেকে গুরুত্বপূর্ন ভাববার। সময় এখন আবার আরেকটু বয়স্ক হওয়ার।

 

কি অদ্ভুতই এই ব্যস্তত! পুরো আমিটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।– এখন আমি!!!

দায়িত্ব এতটাই যে দায়িত্বহীন হয়ে গিয়েছি। সবাইকে নিয়ে আর সবকিছুকে নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে কখন আর কিভাবে বড় হয়ে গেলাম খেয়ালই নেই। নিজেও যে কিছু তা ভুলে গিয়েছেই। বড় বড় স্বপ্নগুলো কাল্পনিক গল্প হয়ে গেল। নিজেকে ভালোবাসা একটি অতীতের সূবর্ন স্মৃতি হয়ে থেকে গেল। জীবন হয়ে গেল ব্যস্ততা আর বেঁচে থাকার যুদ্ধ যেখানে আমি হেরেই যাচ্ছি তবুও লড়াই করেই যাচ্ছি। জীবন হতে শুধুই চেয়ে যাচ্ছি আর প্রতিনিয়ত পাওয়াগুলো কমে আসছে। এছাড়াও এখন অন্যের থেকে ভালো হতে গিয়ে সবার সাথে মিলে মিশে থাকতেই ভুলে গিয়েছি। জোরে জোরে হাসা, যাকে তাকে নিজের ভেবে ভালোবাসা সবই ভুলে গিয়েছি। সাতটা পাঁচটার মাঝে ব্যস্ত হয়ে উঠেছি। সূর্য উঠার পরে ঘুম হতে উঠছি আর সূর্য ডুবে যাওয়ার অপেক্ষায় হাজার হাজার দিন অপচয় করছি।

 

বই উল্টাতে উল্টাতে জীবনের ইতিহাসের পাতা ছিঁড়ে ফেলছি। এই মুহুর্তে এতটাই বড় হয়ে গিয়েছি যে এখন আর কাউকে কিছু বলিনা, কারো সাথে বসে এক দন্ড এই মুহুর্তটাকেই সবটা দিয়ে অনুভব করি না। জানিনা এমন বড় কি করে হয়ে গেলাম। এতটা ব্যস্ত কি করে হয়ে গেলাম ।

 

আচ্ছা আমিই কি ব্যস্ত শুধু, নাকি আমরা?

 

Comments

Popular posts from this blog

হাবিজাবি । এক অসম্পূর্ন , অপ্রকাশিত বই। সন্দীপ চন্দ্র দাস

            হাবিজাবি                       আমার কথা     খুব ভালো নয় বরং একটু আকটু পড়তে ভালোবাসে এমন যে কেউ আমার লেখাগুলো কোনো একটি লেখা একবার পড়লেই আসলে বুঝে যাবে আমি লেখক বলার জন্য মূলত যোগ্য নই। আর আমি তা নিজেও মানি। শুধু যে মানি তাই নয়, সাথে মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করি। তবুও একজন সাধারণ মানুষের মনেও তো অনেক অনেক জমানো কথা থাকে যা বলা কঠিন , আমি সেই সাধারণ মানুষই যেকিনা সেই জমানো কথাগুলো লিখে ফেলি। হয়তো এই আশায় যে কোনো একদিন বসব অবসর হয়ে নিজের সাথে নিজে সেদিন এক এক করে সব পড়ব আর নিজেই ভেবে আশ্চর্য হবো যে কেন লিখেছিলাম এই লেখাটি । তাই আমায় একজন লেখক ভাববেন নাহ্‌ তাহলে সম্ভবনা এটারই বেশী যে আপনার মনে হবে এই হাবিজাবিগুলো পড়ে আপনার অনেকটা সময় অপচয় হলো। তাই আমি অনুরোধ করব ভাবুন একজন সাধারণ ব্যক্তি নিজের কথাগুলো লিখে চলে গিয়েছে, এখন আমায় জানার জন্য মূলত পড়ছেন।   অসম্ভব ভালো থাকবেন। আপনার জন্য পৃথিবীর সব ভালোবাসা রইলো।                                                   উৎসর্গ   সেই সুদর্শণাকে আমি আমা

তার মনের গলি ।

আমি জানি এই শহরের সকল অলিগলি , শুধু জানা আর হলো না- তার মনে অবধি গিয়েছে সেই এক রাস্তাটা ! আমি অসংখ্যবার বাহির হয়েছে সেই রাস্তার খোঁজে তবে প্রতিবার ব্যর্থ হয়েই নিজ ঘরের রাস্তায় চলে এসেছি। এমনটা নয় যে জিজ্ঞাসা করিনি কাউকে সেই রাস্তার ঠিকানা !! কিন্তু কেউই জানতো না তাই জানাতে পারেনি আর যারা জানতো তারা নিজের অংশীদার চাচ্ছিল না তাই ইচ্ছে করে জানাই নি।   

সম্পর্ক | Sandip Chandra Das

 ফোনে কথা বলার শেষের দিকে হঠাৎ বলে উঠা-  "চলো দেখা করি !"  রাত ১২টা ৩৫ মিনিট আর ২৫ সেকেন্ড , সে বললো তুমি আসো আমি বারান্দায় দাড়ালাম ......... জলদি ! আমি বললাম না একটু দেড়ি করেই আসবো !!  ;কেন ? আমি চাই তুমি একটু সাজো ... ; ; না সাজলে হবে না ? হবে না কেন ! অবশ্যই হবে ।  ;জোর করবে না যাতে করে আমি সাজতে বাধ্য হই ? নাহ !  কেন ?  এমনি ( কারন আমি জানি সে সাজবেই ) ! তুমি বারান্দায় থেকো আমি আসছি । ' ' ১০ মিনিটের পথ - রাতে রিক্সাও নেই তাই হেটে হেটেই আসতে হচ্ছে ! ' হাতে চায়ের কাপ নিয়ে এই শীতের রাতেও সে বারান্দায় অনেক রাত অবধি অপেক্ষারত আছে সে , খুব সাজুগুজু করে তেমন কিছু নয় । একেবারে সাদামাটা বেশে ! চুল গুলো খুব সুন্দর করে বাধা , হাতে অল্পকিছু করে নীল চূড়ি পরা যাকিনা রাতের কারনে গাঢ় নীল রঙের দেখাচ্ছে আর কপালের মাঝামাঝিতে ছোট একটি কালো টিপ আর বোধহয় নীল রঙের কাপড় পরে আছে এবং নিজেকে সুন্দর করে জড়িয়ে রেখেছে আমার দেওয়া সেই মিষ্টি রঙ্গের কাশ্মিরী চাঁদর দিয়ে ( তার জন্যই চাঁদরটি আনা কেননা তার খুব শখ ছিল )।  আমি এসে হাজির !  সাধারনত এতো রাতের দিকে পথে কাউকে হাটতে দেখলে - পাহারা দেওয়া